• ঢাকা

  •  শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪

ভিনদেশ

বোরখায় নিষেধাজ্ঞা জারি করছে মরক্কো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: ০৮:৩২, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭

বোরখায় নিষেধাজ্ঞা জারি করছে মরক্কো

আফ্রিকার তৃতীয় দেশ হিসেবে বোরখা নিষিদ্ধ করতে চলেছে মুসলিম দেশ মরক্কো। এর আগে চাদ ও মিশরে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে বোরখার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শুধু বোরখা পরাই নয়, বোরখা তৈরি এবং বেচাকেনাও নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বোরখা পরা, তৈরি করা এবং তার আমদানি-রফতানি করা সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। মরক্কোর সমস্ত শহরেই একই নিয়ম বলবৎ হবে।’

ওই কর্মকর্তা জানান, ‘অনেক দুষ্কৃতী বোরখাকে সহজ আড়াল হিসাবে ব্যবহার করে। দুষ্কৃতিরা বোরখার আড়ালে থেকে অনেক অপরাধ করে অনায়াসেই। তাই দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে এই সিদ্ধান্ত।’

সাধারণত মুসলমান মহিলারা পাঁচ ধরনের বোরখা ব্যবহার করেন। খিমার, বোরখা, নিকাব, হিজাব এবং চাদর। মাথা, গলা ও ঘাড়ের অংশ ঢাকা পোশাককে বলে খিমার। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ মুখটাই থাকে অনাবৃত। মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা পোশাককে বলে বোরখা। এই পোশাকে পাতলা কাপড় দিয়ে চোখও ঢাকা থাকে। নিকাবের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র খোলা থাকে চোখ দু’টি। হিজাব অনেকটা খিমারের মতোই। তবে মাথা ও গলা ঢাকা থাকে এই পোশাকে। চাদর অনেকটা নিকাবের মতো। এক্ষেত্রে তৈরি পোশাক নয়, বরং একটা আলগা চাদর দিয়ে মাথা ও মুখের কিছুটা অংশ ঢেকে রাখেন মুসলিম মহিলারা।

মরক্কোর বর্তমান রাজা ষষ্ঠ মহম্মদও নিকাব বা বোরখা জাতীয় সম্পূর্ণ ঢাকা পোশাকের বিপক্ষে। উদারমনস্ক মহম্মদ চান, মেয়েরা হিজাব বা খিমার জাতীয় পোশাক পরুন। তবে কাসাব্লাঙ্কার মতো মরক্কোর বেশ কিছু এলাকা এখনও বেশ গোঁড়া। এখনও এই সমস্ত অঞ্চলে মহিলাদের বোরখার মতো সারা শরীর ঢাকা পোশাক ছাড়া অন্য কিছু পরার অধিকার নেই।

সংবাদ সংস্থা জানায়, দেশের প্রতিটি রাজ্যে যাতে যথাযথ ভাবে এই নিষেধাজ্ঞা মান্য করা হয়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

দক্ষিণ মরক্কোর টেরোড্যান্টে রয়েছে বোরখা তৈরির একাধিক কারখানা। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত ‘স্টক’ খালি করে দিতে বলা হয়েছে। মরক্কোর বাণিজ্য নগরী কাসাব্লাঙ্কায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে সরকারের তরফে এর মধ্যেই শুরু করা হয়েছে প্রচার।

এর আগে নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ইতালি, বুলগেরিয়ায় নিষিদ্ধ হয়েছে বোরখা। মিশরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোরখা পরা নিষিদ্ধ। ২০১৫ সালের জুনে আত্মঘাতী হামলার পর থেকে চাদেও নিষিদ্ধ হয়েছে সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা এই পোশাক।

মরক্কো সরকারের এহেন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে কট্টরপন্থী সালাফি সংগঠন। সালাফি নেতা শেখ হাসান কেট্টানি ফেসবুকে রীতিমতো হুমকি দিয়ে লেখেন, ‘এমনটা করা হলে বিপর্যয় নেমে আসবে।’

জানুয়ারি ১৩, ২০১৭

মন্তব্য করুন: