সড়কজুড়ে লালশাক, চলাচলে দুর্ভোগ

জীবননগর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলোতে সবজি-বীজ উৎপাদনকারীদের অত্যাচারে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে বীজ উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ডাঁটাশাক শুকানো হচ্ছে। 

মৌসুমের শুরু থেকে যতই দিন যাচ্ছে ততই রাস্তাগুলো এলাকার কৃষকদের দখলে চলে যাচ্ছে। সড়কের ওপর ডাঁটাশাক শুকানোর ফলে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় পথচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জীবননগর উপজেলার একটি পৌরসভাসহ আটটি ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে সরেজমিন দেখা গেছে, গ্রামীণ সড়কের বেশির ভাগ স্থানেই কৃষকরা বীজ উৎপাদনের জন্য লালশাকের ডাঁটা রাস্তায় ওপর শুকাচ্ছেন। রাস্তাজুড়ে লালশাকের ডাঁটা শুকানোর কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, করিমন, নসিমনসহ যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে চালকদের পাশাপাশি যাত্রীসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার মিনাজপুর থেকে কুলতলাগামী প্রায় তিন কিলোমিটার পাঁকা রাস্তা দিয়ে ওই গ্রামের সাধারণ লোকজনসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া মিনাজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। সম্প্রতি এক মাস যাবৎ ওই এলাকার বেশ কিছু লাল শাক চাষি রাস্তার ওপর বীজ শুকানোর ফলে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এমনকি প্রায় সময় ওই সব সড়কগুলোতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় অনেকে গুরুত্বর আহত হয়েছেন। 

দুই সপ্তাহ আগে উপজেলার কালা গ্রামের এক যুবক মোটরসাইকেলে কুলতলা গ্রামে যাওয়ার পথে লাল শাকের বীজে পিচলে পড়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

রাস্তায় লাল শাকের বীজ থাকার ফলে স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মিনাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুম, রিপন ও হাবিবা জানান, আগে রাস্তা দিয়ে আমরা সোজাসুজি স্কুলে চলে আসতাম। এখন রাস্তার উপর শাকের ডাটা থাকার কারণে বাইসাইকেল নিয়ে স্কুলে যেতে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।

পথচারী বাপ্পী জানান, প্রতিদিন মিনাজপুর গ্রামের রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। এখন এক মাস ধরে এলাকার বেশ কিছু কৃষক রাস্তার ওপর লাল শাকের বীজ রাখার ফলে মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে আমাদের অনেক সমস্য হচ্ছে। বিশেষ করে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা পিচ্ছিল থাকে। আমরা কৃষকদের রাস্তায় শাকের বীজ দিতে নিষেধ করলেও কোনো কথায় শুনতে চায় না তারা। রাস্তায় বীজ দিলে এক দিকে যেমন পথচারীদের সমস্যা হয়, অন্যদিকে সরকারের লাখ লাখ টাকার রাস্তা নষ্ট হচ্ছে।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, ব্যস্ততম গ্রামীণ সড়কগুলোতে শাকের ডাঁটা বিছিয়ে শুকানোর ফলে জনজীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২
সালাউদ্দীন কাজল/এবি/