• ঢাকা

  •  শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

বাংলাদেশ

লালমনিরহাটে নিপাহ ট্রাজিডির ৬ বছর

আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট সংবাদদাতা

 প্রকাশিত: ১০:৪২, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

লালমনিরহাটে নিপাহ ট্রাজিডির ৬ বছর

লালমনিরহাট: ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের নিপাহ ট্রাজিডিতে প্রাণ হারায় ২৬ জন । দীর্ঘ ৬ বছর পরেও এসব প্রাণহানির কথা আজও ভূলেননি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলাবাসী। শুধুমাত্র সচেতনার অভাবে দীর্ঘ ওই লাশের মিছিলে বাদ যায়নি শিশুরাও। আপনজনদের হারানোর ব্যাথা আজও তাড়া করে স্বজনদের।

২০১১ সালের ১ ফেব্রুয়াারি সেখানে হঠাৎ করে দেখা হয় অজানা ‘জ্বর’। জ্বরে সংক্রামিত হওয়ার তিন থেকে চার দিনের মধ্যে লোকজন ঢলে পড়তে থাকেন মৃত্যুর কোলে। পড়ে বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বের করেন এটি আসলে এনকেফালাইটিস। যা নিপাহ ভাইরাস হিসেবে পরিচিত।

এই নিপা ভাইরাসের সংক্রমনে কয়েকদিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শিশু, মহিলাসহ বিভিন্ন বয়সী অন্তত ২৬ জন মানুষ প্রাণ হারায়। যদিও সরকারীভাবে এ মৃত্যুর সংখ্যা ১৮ জন বলে দাবি করা হয়। আর ৬ বছর আগে ঘটে যাওয়া মানবিক বির্পযয়ের সেই দু:সহস্মৃতি আজও ভূলেনি ওই এলাকার মানুষ।

হাতীবান্ধা বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক অশোক ঘোষ-তাপসী ঘোষ দম্পতি ২০১১ সালের এই সময়ে নিপা ভাইরাসের কারণে হারিয়েছিলেন তাদের দু’সন্তানকে।

অপরদিকে একই অবস্থা বিরাজ করছে দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের কাজী জাহাঙ্গীরের পরিবারেও। তিনিও এই ঘাতক ভাইরাসে হারিয়েছিলেন তার দুই মেয়ে জয়ী ও সর্বোকে।

শুধু ওই অবুঝ শিশুরাই নয় হাতের মেহেদির রঙ শুকানোর আগে হতভাগি লিপি বেগম হারিয়েছে তার স্বামীকে।

বিয়ের ১১ মাস পর ওই নিপাহ ভাইরাসের আক্রমনে অন্তসত্ত্বা স্ত্রীকে ছেড়ে চির বিদায় নেন আজিজুল (২৭)। কিছুদিন পর লিপির কোলে ফুটফুটে এক শিশুর জন্ম হয়েছে ঠিকই কিন্তু বাবা নামক সেই প্রিয় ডাক অধরাই থেকে গেল তার।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র মতে, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাতীবান্ধায় আসা রোগ তত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষনা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) বিশেষজ্ঞদল জানিয়েছিলেন, যেহেতু নিপা ভাইরাসের বাহক বাঁদুড় তাই কোনো এলাকায় একবার এ রোগ দেখা দিলে পরবর্তি কয়েকটি বছর শীতের মৌসুমে রোগটি পুনরায় ফিরে আসার আশংকা থাকে। তাই স্বাস্থ্য সচেতনতাই এই ঘাতক নিপা থেকে রক্ষার একমাত্র পথ বলে জানান বিশেষজ্ঞদলটি। সেই থেকে পরবর্তী বছরগুলিতেও বেশ প্রচার-প্রচারণা হওয়ায় জনসাধারণ মোটামোটি সর্তক হয়ে ওঠেছে। কিন্তু এ বছর স্বাস্থ্য সচেতনায় সরকারী বা বেসরকারীভাবে এখন পর্যন্ত কোন প্রচার-প্রচারণা লক্ষ্য করা যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রমজান আলী বলেন, নিপা ভাইরাস সচেতনতায় লিফলেট বিতরণে মাসিক মিটিং এ আলোচনা হয়েছে। আমরা প্রচার চালাবো।

ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৭

মন্তব্য করুন: