• ঢাকা

  •  শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

অর্থ ও কৃষি

মোচা আছে দানা নেই

আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট সংবাদদাতা

 প্রকাশিত: ১০:১৫, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মোচা আছে দানা নেই

লালমনিরহাট: লালমনিরহাট জেলা ভুট্টা চাষে ব্যাপক পরিচিতি পেলেও এবার নিম্নমানের বীজ ধারাবাহিকতায় ছন্দপতন ঘটিয়েছে। বীজ বপনের পর থেকে শুরু করে গাছ বেড়ে ওঠা পর্যন্ত- সবই ঠিক ছিল। কিন্তু যখন গাছে মোচা ধরেছে ঠিক তখনই দেখা গেছে বিপত্তি। প্রতিটি গাছেই মোচা আছে তবে নেই দানা।

এহেন পরিস্থিতিতে ধারদেনা করে চাষাবাদ করা কৃষক হয়ে পড়েছেন দিশেহারা।  জেলার হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, কাবেরী-৫০, সিপি-৯৮১, বন্ধন-৯০৯১ বীজের ক্ষেত্রে এ ঘটনা ঘটেছে।
 
বাউরা এলাকার কৃষক সাদেকুল ইসলাম জানান, নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ধারদেনা করে ৭ বিঘা জমিতে এবার ভুট্টা চাষ করেছেন। তিনি দিয়ে ছিলেন ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার হাইব্রিড সিড লিমিটেডের সিপি-৯৮৮ জাতের ভুট্টা। এ পর্যন্ত তার ব্যয় হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা।

হাতীবান্ধা উপজেলার দঃ গড্ডিমারী গ্রামের আশরাফ হোসেন জানান, জমি মালিকের কাছ থেকে প্রতি বিঘা ৩ হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে তিনি এবার ৬ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। তবে তার আড়াই বিঘা জমির ভুট্টার মোচায় কোনো দানা আসেনি। এই আড়াই বিঘাতে তিনি দিয়ে ছিলেন কাবেরী সিড লিমিটেডের কাবেরী-৫০ জাতের ভুট্টা।

একই এলাকার ভুট্টা চাষী দবিয়ার রহমান, আজিজার মিয়া, কফিল হোসেনসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, গত বছর কাবেরী-৫০ জাতের ফলন ভালো হওয়ায় চলতি মৌসুমেও তারা ওই জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। কিন্ত এবার কাবেরী-৫০ জাতের ভুটার মোচা হয়েছে ঠিকই, কিন্ত তাতে দানা হয়নি।

একই অভিযোগ করেন বাধন-৯০৯১ জাতের ভুট্টা চাষী জাহিদূল ইসলাম। তিনি বলেন, অন্যান্য জাতের পাশাপাশি তিনি এবার দেড় বিঘা জমিতে বাধন-৯০৯১ চাষ করেছেন। ওই জাতের ভুট্টার মোচাগুলোও হয়েছে অনেক ব্ড় বড়, কিন্ত তাতে কোন দানা হয়নি।

এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ভুট্টা চাষীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনাসহ ক্ষতিপূরণ দাবী করেছেন।

ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার হাইব্রিড সিড লিমিটেডের মার্কেটিং অফিসার মাসুদ রানা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে ভুট্টার মোচায় দানা নাও হতে পারে। অভিযোগ পাওয়ার পর আমাদের লোকজন হামিদুলের ভুট্টা ক্ষেত পরির্দশন শেষে বিষয়টির সুরাহা করা হয়েছে’।

কাবেরী সিড লিমিটেডের সিনিয়র মার্কেটিং অফিসার শাহিনুর কিবরিয়া জানান, বিষয়টি তিনি ইতোমধ্যে অবগত হয়ে কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। বৈরী আবহাওয়া কারনে এটা হতে পারে। তাছাড়া শুধু কারেরী-৫০ নয়, এবার অনেক কোম্পানিরই ভুট্টা মোচায় দানা হায়নি বলে স্বীকার করেন ওই মার্কেটিং অফিসার।

এ বিষয়ে বাধন-৯০৯১ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

লালমনিরহাট কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিধু ভূষণ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭

মন্তব্য করুন: