• ঢাকা

  •  বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

বাংলাদেশ

আড়াই কোটি টাকা নিয়ে উধাও নারী উন্নয়ন প্রকল্প

আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট সংবাদদাতা

 প্রকাশিত: ১১:২৪, ১৫ মে ২০১৭

আড়াই কোটি টাকা নিয়ে উধাও নারী উন্নয়ন প্রকল্প

লালমনিরহাট: নারীদের উন্নয়নের কথা বলে 'নারী উন্নয়ন প্রকল্প'। ওই প্রকল্পের কথা বলে লালমনিরহাটের আদিতমারীতে প্রলোভন দেখিয়ে দরিদ্র মহিলাদের কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন 'নারী উন্নয়ন প্রকল্প' নামে একটি সংগঠন।

এ ঘটনায় আদিতমারী থানায় বৃহস্পতিবার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আদুরী বেগম নামের একজন ভুক্তভোগী।

ওই প্রকল্পের ট্রেইনার আদুরী বেগম, পারভীন আক্তার, সুলতানা, ও রেজিয়া বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর আদিতমারী উপজেলার ফায়ার সার্ভিস অফিস সংলগ্ন বাসা ভাড়া নিয়ে অফিস খুলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত 'নারী উন্নয়ন প্রকল্প' (রেজি নং-ঝ- ১০২৭২- ২০০৯) নামের একটি সংগঠন। যার বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা বলে উল্লেখ করা হয়। সাইন বোর্ডে প্রধান কার্যালয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ৫০, ডি, ইনার সার্কুলার ভি,আই,পি রোর্ড, নয়া পল্টন (৫ম তলা) ঢাকা-১০০০।

তারা বলেন, কার্যক্রম শুরুর পূর্বে প্রকল্পের সমন্বয়কারী এস আলম স্বাক্ষরিত কার্যক্রমের অবগতিকরণ লক্ষ্যে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর একটি পত্র প্রেরণ করেন। যার অনুলিপি চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা, ঢাকা, পুলিশ সুপার, ইউএনও, সমাজ সেবা অফিসার ও অফিসার ইনচার্জ কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও আদিতমারীকে সদয় অবগতির জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা একটি অরাজনৈকিত ও মানব কল্যাণমূলক বেসরকারী প্রতিষ্ঠান। নারী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানবগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলে তাদের দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান ও স্বাবলম্বীতা অর্জনের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণমূলক কার্যক্রম লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও আদিতমারী উপজেলায় শুরু করা হচ্ছে।
 এ ধরনের একটি চিঠি প্রশাসনকে দিয়ে তারা কার্যক্রম শুরু করেন।

এরপর সংগঠনটি ৫ প্রকার হস্তশিল্পের কাজ শেখানোর কথা বলে ৩৫ জন মেয়েকে তাদের কার্যক্রমের ট্রেইনার হিসেবে নিয়োগ দেন। প্রতিজন ট্রেইনারের আওতায় ১৫টি দল গঠন করা হয়। প্রতিটি দলে কমপক্ষে ৩০ জন করে সদস্য ভর্তি করা হয়। প্রত্যেক সদস্যদের ভর্তির জন্য ১ হাজার ৪শ ৩০ টাকা টাকা করে নেয়া হয়। আর প্রশিক্ষণ শেষে তাদেরকে একটি করে সেলাই মেশিন কিস্তিতে প্রদান করা হবে।

এ ভাবেই নারী উন্নয়ন প্রকল্প শুধু আদিতমারীতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গত বুধবার অফিসে তালাবদ্ধ করে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায়। পরদিন ট্রেইনাররা অফিসে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখতে পেলে ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়।

আমরা প্রকল্প সমন্বয়কারী এস আলমের কথামতো গ্রামের গরীব মানুষের প্রশিক্ষণের কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১ হাজার ৪শ ৩০ টাকা করে নিয়ে অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। রাতারাতি পালিয়েছে ওরা আর বিপদে পড়েছি আমরা, বলেন ট্রেইনাররা।

নারী উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী এস আলমের মোবাইল (০১৭৭০৮৬১৮৮৯) ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

আদিতমারী থানার ওসি হরেশ্বর রায় এ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।

আদিতমারীর ইউএনও আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মে ১৫, ২০১৭

মন্তব্য করুন: