• ঢাকা

  •  বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

বাংলাদেশ

লালমনিরহাটে নদীগর্ভে ৩টি স্কুলসহ ৫ শতধিক বাড়ি

আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট সংবাদদাতা

 প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ১৫ জুলাই ২০১৭

লালমনিরহাটে নদীগর্ভে ৩টি স্কুলসহ ৫ শতধিক বাড়ি

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত ৭ দিনে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৩টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ জেলায় ৫ শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন স্প্যার বাঁধে ভাঙ্গন দেখা দেওয়ার পাশাপাশি হাতীবান্ধা উপেজলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধবুনী গ্রামে শহর রক্ষা বাধেঁর ৮টি স্থানে ভেঙ্গে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে ধরলা নদীর তীরবর্তী সদর উপজেলার কুলাঘাটে শহর রক্ষা বাঁধ ও হাতীবান্ধা উপজেলা তিস্তা নদীর তীরর্বতী গড্ডিমারী ইউনিয়নের তালেব মোড় এলাকার বাঁধ। সদর উপজেলার শীবের কুঠি ও চর শীবের কুঠি এলাকাতেও ধরলা নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম কায়েদ জানান, তার ইউনিয়নে পূর্ব ডাউয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ডাউয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তিস্তায় বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া গত ৩ দিনে ৫৭টি বসতবাড়ীসহ অসংখ্য আবাদী জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। নদী ভাঙ্গনের শিকার পরিবারগুলো বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শফিউল আলম রোকন জানান, তার ইউনিয়নে বুধবার বিকালে পশ্চিম হলদিবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় তিস্তার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া গত ৪ দিনে তার ইউনিয়নে ২৬টি বসতবাড়ীসহ অনেক আবাদী জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। হাতীবান্ধার ইউএনও সৈয়দ এনামুল কবির ইতোমধ্যে নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে তাদের পুর্ণবাসনের আশ্বাস দিয়েছেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার জানান, তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ৪টি, আদিতমারী উপজেলায় ৪টি ও হাতীবান্ধা উপজেলায় ১১টিসহ মোট ১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ বিদ্যালয়গুলো হলো, হাতীবান্ধা উপজেলার কিসামত নোহালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডাউয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম হলদীবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব হলদীবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পার শেখ মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিন্দুর্ণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর গড্ডিমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর হলদিবাড়ী শিশু কল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরবুদারু কাশিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধুরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন ইসমাইলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোবর্দ্ধন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহাদুর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোবর্দ্ধন চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে জেনেছি লালমনিরহাটের ৩টি উপজেলায় মোট ১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের সাথে সমন্বয় করে নদী ভাঙ্গনে তালিকা তৈরী করতে বলেছি। প্রতিটি নদী ভাঙ্গনের শিকার পরিবারকে পুর্ণবাসন করা হবে।

জুলাই ১৫, ২০১৭

মন্তব্য করুন: