• ঢাকা

  •  শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

ফিচার

ওরা জীবন থেকেই শিক্ষা নিচ্ছে ভবিষ্যত গড়ার

অমিয় দত্ত ভৌমিক

 প্রকাশিত: ১৫:২৭, ২০ জানুয়ারি ২০১৭

ওরা জীবন থেকেই শিক্ষা নিচ্ছে ভবিষ্যত গড়ার

রামু (কক্সবাজার): সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পর মা’কে চিনে নেয় ঘ্রাণের মাধ্যমে। তারপর আস্তে আস্তে বেড়ে ওঠে। বাবা মায়ের হাত ধরে স্বপ্নের পথে এগিয়ে চলে। আর যাদের বাবা মায়ের হাত ধরার আগেই ঠাই হয় কোন এক অনাথ আশ্রমে তারা? তাদের কি আছে কোন স্বপ্ন? বা স্বপ্নের পথে এগিয়ে দেওয়ার মতো কেউ?

শুক্রবার সকাল ৮টা। গন্তব্য রামুর রাংকুট বনাশ্রম মহাবিহার। সহকর্মীকে সঙ্গীকরে পৌছুতে বেলা সোয়া ৯টা। বুদ্ধ বিহারের প্রধান ফটক পেড়িয়ে কয়েক কদম সামনে হেটে চোঁখ পড়লো ছোট্ট একটা মাঠে। পাশেই একটি দ্বিতল ভবন। প্রথমে স্কুল মনে হলেও, পড়ে জানা গেল এটি একটি অনাথালয়। নাম ‘জগত জ্যোতি চিলড্রেন ওয়েল ফেয়ার হোম’।

এই অনাথালয়ে কথা হয় এমন কয়েকজনের সাথে যারা কোন কিছু বুঝতে শেখার আগেই ঠাই পায় এই হোমে। এদের তিনজন প্লাবন বড়ুয়া, শাপলা বড়ুয়া আর ওয়াং খিং মারমা। তারা এখানে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে বর্তমানে অন্য স্কুলে ১০ম শ্রেনিতে পড়াশুনা করছে। তারা জানায় তাদের স্বপ্নের কথা। তাদের কেউ শিক্ষক হতে চায় কেও ব্যবসায়ী।

প্লাবন বড়ুয়া। গনিত তার পছন্দের বিষয়। তার ইচ্ছে বড় হয়ে ব্যাংকার হবে। আর শাপলা বড়ুয়ার পছন্দ একাউন্টিং। তার স্বপ্ন বড় হয়ে শিক্ষকতা করবে। তবে ব্যতিক্রম ওয়াং খিং মারমা। তার পছন্দের বিষয় একাউন্টিং। বড় হয়ে সে ব্যবসায়ী হতে চায়। ওদের সাথে কথা বলতে বলতে অজান্তেই জল জমে যায় চোখের কোনে। কানে বারবার ধ্বনিত হচ্ছে ওদের স্বপ্নের কথাগুলো। হয়তো তারা কেউ গুছিয়ে তাদের  ভবিষ্যতের স্বপ্ন বোনার কথাগুলো ব্যাখ্যা করতে পারেনি। কিন্তু তারা এই ১৩-১৪ বছর বয়সেই হয়তো তাদের জীবন থেকেই শিক্ষা নিচ্ছে ভবিষ্যত গড়ার।

মাঠ পেড়িয়ে ভবনের বারান্দায় গিয়ে দেখা গেল গোটা চল্লিশেক বাচ্ছা পড়াশুনা করছে। সেখানে কথা হয় চিলড্রেল ওয়েলফেয়ার হোমের তত্বাবধায়ক রুমা বড়ুয়া ও ওতিং অং মারমার সাথে। জানতে চাইলাম তাদের কথা। রুমা বড়ুয়া জানালেন, হোমে তারা তিনজন তত্বাবধায়ক আছেন। অন্যজন রিতা মালাকার। যিনি বর্তমানে ভারতে ট্রেনিংয়ে আছেন। এখানে এখানে বর্তমানে ১৫০ জন অনাথ আছে। আর স্কুলটি ৫ম শ্রেনি পর্যন্ত। যাদের মধ্যে ৭০জন এখানেই পড়াশুনা করছে। আর বাকীরা প্রাথমিকের গণ্ডি পেড়িয়ে এখন বিভিন্ন স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছে। এদের সবাই অনাথ। এই বাচ্ছারা খুবই ছোট বেলা থেকেই হোমে আছে। তাদের বাবা মায়ের মতো পরম মমতায় লালন পালন করছেন তারা।
 
জানুয়ারি ২০, ২০১৭

মন্তব্য করুন: