• ঢাকা

  •  বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

বাংলাদেশ

লালমনিরহাটে খাস জমি দখল করে ভাড়া আদায় করছে দখলবাজরা!

আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট সংবাদদাতা

 প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

লালমনিরহাটে খাস জমি দখল করে ভাড়া আদায় করছে দখলবাজরা!

লালমনিরহাট: সরকারী খাস জমি দখল করে ঘর তোলে ভাড়া আদায় করার অভিযোগ উঠেছে কতিপয় দখলবাজদের বিরুদ্ধে। দখল উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হলেও দেড় বছরে তা বাস্তবায়ন হয়নি।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের হাজীগঞ্জ হাটের প্রায় দেড় একর জমি দখলদারদের দখলে রয়েছে।

স্থানীয় ভুমি অফিস সুত্রে জানা গেছে, ৫টি দাগের ১.২৯ একর জমির উপর হাজীগঞ্জ হাট অবস্থিত। ১৯৯৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর হাটের এ জমি পেরীফেরী করে নেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। পেরীফেরীভুক্ত জমির ১৬৬৫ দাগের ১.৪৩ একরের মধ্যে ০.৭১৫ তমধ্যে ০.৪১৫ একর জমির উপর মালিকানা দাবি করে মামলা দায়ের করেন স্থানীয় ছোট কমলাবাড়ির গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক।

এ মামলায় আদালত বাদির পক্ষেই আদেশ জারি করেন। সেই আদেশের উপর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে দুই দফায় তা খারিজ করেন জেলা যুগ্ম জজ আদালত। পরবর্তীতে হাইকোর্ট ডিভিশনের সিভিল রিভিশন ২৯৫৬/২০০২ নং মামলাও বাদির পক্ষেই আদেশ জারি করেন।

এরই মাঝে ২০০৭ সালে স্থানীয় ব্যবসায়ী মোখলেছুর রহমানকে ৯.৩৩ বর্গ মিটার জমি বন্দবস্ত প্রদান করে জেলা প্রশাসন।  কিন্তু হাইকোর্ট মামলার বাদি আবু বক্করকে ১৬৬৫ দাগের ০.৪১৫ একর জমির সীমানা নির্ধারনের আদেশ দিলেও তা কার্যকর হয়নি বলে আবু বক্কর সিদ্দিকের দাবি।

অপর দিকে রাষ্ট্রপক্ষের অহেতুক দাবি করা পেরীফেরী ভুক্ত ও হাটের সকল সম্পত্তি স্থানীয় কতিপয় দখলবাজ দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করছেন। দখলবাজদের কারনেই হাজীগঞ্জ হাটের ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে হাটের ইজারাদার উপজেলা ভুমি অফিসে আবেদন জানালে উপজেলা হাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি ২৩ অক্টোবর ২০১৫ তারিখের সভায় উক্ত হাটের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

অদৃশ্য কারনে সেই সিদ্ধান্ত অদ্যবধি বাস্তবায়ন না হওয়ায় হাটের পুরো জমি দখলবাজদের দখলে।

ব্যবসায়ীরা জানান, দখলবাজরা জমি দখল করে ভাড়া আদায় করছে। দখলবাজদের জন্য সরকারীভাবে বন্দোবস্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। তারা দখরবাজদের হাত থেকে হাট উদ্ধার করতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

দখলবাজ রবি লাল জানান, জমি তাদের দখলে। তাই তারাই ভাড়া আদায় করছেন। ভাড়ার টাকা বিভিন্ন স্থানে বন্টন করা হয়। তবে বিভিন্ন স্থানের নাম তিনি প্রকাশ করেননি।

হাজীগঞ্জ হাটের ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম জানান, দখলবাজদের কারনে হাটের জৌলুস ও ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। তিনি একাধিকবার আবেদন করেও উচ্ছেদের অভিযান চালায় নি উপজেলা প্রশাসন।

ভাদাই ইউনিয়ন ভুমি অফিসের উপ সহকারী ভুমি কর্মকর্তা (তহশিরদার) মনোরঞ্জন রায় জানান, ওই হাটের বিষয়ে অনেক নথি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

আদিতমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) দায়িত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খোজ খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ মোঃ আলাউদ্দিন খান জানান, বিষয়টি খোজ খবর নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৭

মন্তব্য করুন: