• ঢাকা

  •  শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

বাংলাদেশ

বেহাল দশা চর গড্ডিমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের

আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট সংবাদদাতা

 প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ২১ মে ২০১৭

বেহাল দশা চর গড্ডিমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের

লালমনিরহাট: শিশু শ্রেণী থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতা অনুয়ায়ী শিক্ষর্থীর সংখ্যা ২৪৫ জন। আর পাঠদানের দায়িত্বে আছেন ৮ জন শিক্ষক। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ২৪৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত মাত্র ১৭ জন। তাদের পাঠদানের জন্য আধঘন্টা পর সকাল ১১টায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছেন ৪ জন শিক্ষক। এই চিত্র লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

ওই এলাকার মাইদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, মনির হোসেন ও ছকিনা বেগম বলেন, চর গড্ডিমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দুই বছর আগে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি পায়। বিদ্যালয়টি ৮ম শ্রেণীতে উন্নতি হলেও এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়ন হয়নি। জটিলতার কারণে আপতত ৮ম শ্রেণীর পাঠদান বন্ধ। শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না। দুই একজন আসলেও দুপুর ১২টায় আসেন কিছুক্ষন থেকে দুপুর ২টায় চলেন যান। ৮ম শ্রেণীতে উন্নতি হলেও ক্লাস হয় ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত। এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া না হওয়ায় ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীসহ আশেপাশের অনেক শিক্ষার্থী ২ কিলোমিটার দুরে গিয়ে গড্ডিমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গড্ডিমারী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস করেন। এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারাও বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন না।

বৃহস্পতিবার সকালে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, হাজিরা খাতা অনুয়ায়ী শিশু শ্রেণীতে ২২ জন, ১ম শ্রেণীতে ২৮ জন, ২য় শ্রেণীতে ৩৫ জন, ৩য় শ্রেণীতে ৪৭ জন, ৪র্থ শ্রেণীতে ৬৭ জন, ৫ম শ্রেণীতে ৩৩ জন, ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ৮ জন ও ৭ম শ্রেণীতে ৫ জন করে মোট ২ শত ৪৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। জটিলতার কারণে ৮ম শ্রেণীর পাঠদান বন্ধ আছে। কিন্তু ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর মোট ১৩ জন শিক্ষার্থী থাকলেও ১ জন শিক্ষার্থীরও দেখা মেলেনি। শিশু থেকে ৮ম শ্রেণী মিলে মোট ১৭ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সকাল সাড়ে ৯টায় বিদ্যালয় খোলার নিয়ম থাকলেও সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যালয় তালাবন্ধ পাওয়া যায়। বিদ্যালয়ের অধিকাংশ রুম ও গোটা মাঠ দখল করে নিয়েছে ভুট্টা ব্যবসায়ীরা। ওই বিদ্যালয়ে উড়ে না জাতীয় পতাকা, গাওয়া হয়না জাতীয় সংগীতও।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম বেগম বলেন, চর অঞ্চল হওয়ায় আমাদের যেতে একটু বিলম্ব হয়। আর এখন ভুট্টা মাড়াই চলার কারণে উপস্থিতি একটু কম। শিক্ষক ৮ জনের মধ্যে ১ জন প্রশিক্ষণের বাইরে আছেন ও ১ জনকে পার্শ্বের বিদ্যালয়ে সাময়িক বদলি রাখা হয়েছে।  

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান আতিকুর রহমান বলেন, প্রায় ২ মাস আগে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। চর অঞ্চলের বিদ্যালয় হওয়ায় একটু সমস্যা হতে পারে। তারপরও অনিয়মের বিষয়গুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মে ২১, ২০১৭

মন্তব্য করুন: