মাধবপুরে কৃষকের ক্ষেতে ধান কেটে দিচ্ছেন শিক্ষিকা ডলি
হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা: করোনার মহামারিতে শ্রমিক সংকটে কৃষকের মাথায় হাত। কাজের মানুষ না পেলেও ফসলতো তুলতে হবে। দুর্দিনের জন্য ধান ঘরে তুলতে পারাই এখন একমাত্র চিন্তা। কিন্তু মাঠে নামতে ভয় পায় কৃষকরা।
এমন সময় কৃষকদের সাহস দিতে তাদের পাশে দাড়িয়ে কাস্তে হাতে ধান কাটায় নেমে পড়েছেন মাধবপুর পৌরশহরের নোয়াগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ডলিপ্রভা রায়।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, করোনা সংক্রমণের ভয়ে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কিন্তু সোনালী ধান পড়ে রয়েছে মাঠে। কখন ঝড়, শিলা বৃষ্টিতে ঝড়ে যায় এ নিয়ে কৃষকদের অন্তহীন চিন্তা। এমন সময় শিক্ষিকা ডলিপ্রভা রায় কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন দুরত্ব বজায় রেখে ধান কাটতে। শুধু তাই নয় প্রতিদিন ভোর ৫ টায় কৃষকদের সাথে থেকে কাস্তে হাতে নিয়ে নিরলসভাবে ধান কাটছেন।
ওই শিক্ষিকার ধান কাটা নিছক প্রচার বা ছবি তোলার জন্য নয়। মাটির টানে কৃষক ও দেশের কথা ভেবেই তিনি কৃষকের সঙ্গে থেকে ধান কাটছেন। একজন নারী শিক্ষকের এমন প্রেরণায় আশআপাশের কৃষকরাও ধান কাটায় নেমে পড়েছেন।
স্থানিয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক পাঠান বলেন, শিক্ষিকা ডলিপ্রভা রায় প্রতিদিন মাঠে ধান কেটে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছেন। তার মতো যদি আরও নারী-পুরুষ করোনার এই সংকটে ধান কেটে কৃষকদের সহযোগিতা করতো তাহলে বন্যা, ঝড়, শিলা বৃষ্টির আগেই ধান ঘরে তোলা যেতো।
শিক্ষিকা ডলিপ্রভা রায় বলেন, 'করোনা এখন পৃথিবীর বড় সংকট। কিন্তু এর চেয়ে বড় সংকট দেখা দিতে পারে খাদ্য সংকট। প্রধানমন্ত্রী ও প্রাথমিক শিক্ষা পরিচালক বলেছেন, বোরো ধান কর্তনে আমরা যেন কৃষকের পাশে দাঁড়াই। তাই আমার নিজের চেতনাবোধ থেকে কৃষকদের সাথে ধান কাটছি। যাতে কৃষক বন্ধুরা সহজেই তাদের ধান ঘরে তুলতে পারে। কারণ ঘরে যদি খাদ্য না থাকে তখন অবরুদ্ধ হয়ে করোনার চেয়ে বহু মানুষ না খেয়ে মরবে।'
এপ্রিল ২৬, ২০২০
মন্তব্য করুন: