• ঢাকা

  •  শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪

বাংলাদেশ

২১ আগস্টের ঘাতকদের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব: তথ্যমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক:

 প্রকাশিত: ২০:০২, ২২ আগস্ট ২০২৩

২১ আগস্টের ঘাতকদের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব: তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব ২১ আগস্টের ঘাতকদের মুখপাত্র বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ২১ আগস্টের মতো এমন ভয়াবহ ঘটনাকে মির্জা ফখরুল সাহেব আওয়ামী লীগের সাজানো নাটক বলেছেন; যেখানে এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, তারা এটি ঘটিয়েছে। এমন জঘন্য, ঘৃণ্য, বীভৎস মিথ্যাচার একটি দলের মহাসচিব করতে পারেন, আমার বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট খালেদা জিয়ার অনুমোদনক্রমে তার পুত্র তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যেই গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়েছিলো। আর পত্র-পত্রিকায় দেখলাম, মির্জা ফখরুল সাহেব গতকাল এই ঘৃণ্য গ্রেনেড হামলা নিয়ে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি মহাসচিব বলেছেন - ‘যে জায়গায় অনুমতি দেওয়া হয়েছিলো সেখানে না করে তারা অন্য জায়গায় কেন করলো’। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা ২১ আগস্টের কয়েকদিন আগেই মুক্তাঙ্গণে সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়েছিলাম কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়নি। শেষ মুহূর্তে আমাদের পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করার জন্য মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়। এতে প্রমাণ হয় যে গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করার সুবিধার্থেই মুক্তাঙ্গণে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয় নাই। কারণ মুক্তাঙ্গণে গ্রেনেড ছোঁড়ার সুবিধা সেভাবে নেই। আমাদের দলীয় কার্যালয়ের চারপাশের বিল্ডিং থেকে গ্রেনেড ছোঁড়া যায়। সে জন্যই সেখানে সমাবেশ করতে বলা হয়।” 

তিনি বলেন, ‘সমাবেশের সময় বিল্ডিংয়ের ওপরে সাদা পোষাকে বা পোষাকধারী পুলিশ থাকে। কিন্তু সেই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট কোনো পুলিশ পাহারায় ছিলো না, পরিবর্তে সেখানে তৎকালীন বিএনপি সরকার, তারেক রহমান জঙ্গিদের অবস্থান নিশ্চিত করেছিলো এবং সেখান থেকেই গ্রেনেডগুলো ছোঁড়া হয়েছিলো।’

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব এটি নিয়ে যেভাবে মিথ্যাচার করেছেন, তা আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল। আসলে বিএনপি তো হত্যার রাজনীতি করে আর তাদের মহাসচিব হচ্ছেন মির্জা ফখরুল সাহেব। তিনি বরাবরই মিথ্যাচার করে এসেছেন। এখন সম্ভবত তার মহাসচিব পদটা নড়বড়ে হয়ে গেছে, যে কারণে তিনি মিথ্যাচারের মাত্রাটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন।’

গ্রেনেড হামলা মামলায় দুই দফা সাক্ষী দেওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি আহত হিসেবে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হিসেবে ছিলাম বিধায় তার বুলেটপ্রুফ গাড়িটি আমার স্বাক্ষরে হস্তান্তরের সময় সাক্ষী দিয়েছি। সাক্ষ্য-প্রমাণে সবকিছু স্পষ্ট হয়েছে এবং সেই মামলায় আসামিরা কনটেস্ট করেছে। কনটেস্ট করার পর দিবালোকের মতো সবকিছু স্পষ্ট হয়ে আদালতে তাদের শাস্তি হয়েছে। আসামিদের পক্ষ থেকে আপীল করা হয়েছে। প্রক্রিয়া সমাপ্ত হলেই শাস্তি কার্যকর হবে, তবে অনেক আসামি গ্রেপ্তার রয়েছে।’

এ সময় সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘সরকার দেশে ভয়াবহ একটা কিছু ঘটাতে যাচ্ছে’ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবের এ কথাতেই প্রমাণিত হয় যে, তারা কিছু ঘটাতে চাচ্ছে যেটি মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন। তারা এমন একটা কিছু ঘটাতে চাচ্ছে যাতে দেশে নির্বাচন ভন্ডুল করা যায় এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা যায়।’

ভারতীয় গণমাধ্যম ফ্রন্টলাইন অনলাইনের নিবন্ধে ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না এলে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী সংকটে পড়বে’ এমন মন্তব্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত সাড়ে ১৪ বছরে যেভাবে দেশ এগিয়ে গেছে, বিশ্বসম্প্রদায় তার প্রশংসা করছে। আর বিপরীতে যারা ক্ষমতায় আসতে চায়, তাদের সাথে আছে জামায়াতে ইসলামী, জঙ্গি, মৌলবাদী অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক, সন্ত্রাসীগোষ্ঠী, মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপকারীরা।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির আমলে দেশে ৫০০ জায়গায় একসাথে বোমা ফেটেছিলো, তারা আবার ক্ষমতা পেলে পাঁচ হাজার জায়গায় বোমা ফাটবে এবং দেশটা পাকিস্তান কিম্বা আফগানিস্তানের পর্যায়ে চলে যাবে। সেই বিশ্লেষণই ভারতীয় পত্রিকায় এসেছে এবং এ সমস্ত লেখালেখির পর বিএনপির মধ্যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। তারা যে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে তার প্রমাণ হচ্ছে, তারা রাত তিনটায় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে।’ - বাসস

আগস্ট ২২, ২০২৩

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: