ময়মনসিংহে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতার মৃত্যু

ময়মনসিংহে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটকের পর মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের (৪০) মৃত্যু হয়েছে। সাইদুল ইসলাম নগরীর গোলপুকুর পাড় এলাকার আব্দুস ছালামের ছেলে।

গত সোমবার রাত ১০টার দিকে নগরের গোলপুকুর পাড় এলাকায় সাইদুল ইসলামের চেম্বারে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। পরে রাত একটার দিকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন। 

তিনি বলেন, যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটকের পর সাইদুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্টের পর সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে জমি দখল, বালুরঘাট দখল, স্থানীয় ব‍্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, অস্ত্র প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ ওঠে। এসব ঘটনায় সম্প্রতি যৌথ বাহিনীর কাছে একাধিক অভিযোগ দায়ের হলে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে যৌথ বাহিনীর একটি দল অভিযান চালিয়ে সাইফুল ইসলামকে আটক করে। এ সময় আটক করা হয় আরও ছয়জনকে। 

যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সাইফুলকে মারধর করলে ঘটনাস্থলেই অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়। পরে রাত একটার দিকে সাইদুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

পরদিন মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সাইদুলের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেল তিনটার পর পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হলে এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে।

মৃতের স্বজনরা বলেন, সাইদুল আগে থেকে অসুস্থ ছিল। কিছুদিন আগে তিনি ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে এসেছিলেন। মৃত্যুর বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু স্বজনদের কেউই কোনো মন্তব্য করেননি।

তবে মহানগর যুবদলের সভাপতি মোজাম্মেল হক টুটু বলেন, পরিবারের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, সাইদুলের কোমর থেকে শরীরের নিচের অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। আগে থেকে হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন সাইদুল।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত কর্মচারীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত রাত ১টার দিকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সাইদুল ছাড়াও ছয়জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন সাইদুলকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এসময় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ময়মনসিংহ নগরীর গোলপুকুর পাড় এলাকার মাছুম (২৩), নান্দাইলের মারুফ (২০), নগরীর চর কালীবাড়ী এলাকার হিমেল (২২), একই এলাকার রিয়াজ (২০), নেত্রকোণা পূর্বধলা উপজেলার সালদীঘা এলাকার মামুন এবং মুক্তাগাছা সৈয়দপুর গ্রামের রাসেল (৩০)।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সাইদুল ইসলামকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এনেছিলেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযানে আটকের পর সাইদুল ইসলাম মারা গেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।