খাগড়াছড়িতে রাতভর সংঘর্ষে নিহত ৩, ১৪৪ ধারা জারি
ছবি: সংগৃহীত
খাগড়াছড়িতে রাতভর সংঘর্ষে তিনজন নিহত হওয়ার খবর জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি পৌর শহর ও জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। এ সিদ্ধান্ত রাত ৯টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সহিদুজ্জামান। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, খাগড়াছড়ি সদর ও পৌরসভা এলাকায় শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এ আদেশ জারি থাকবে। এছাড়া, সব পক্ষকে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থানের অনুরোধ জানান তিনি।
সংঘাতে আহত আরও ৯ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রিপল বাপ্পী।
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে ৯ জনকে চিকিৎসা দিচ্ছি। আর তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।’
নিহতরা হলেন, জুনান চাকমা, রুবেল ত্রিপুরা, ধনঞ্জয় চাকমা। এর মধ্যে জুনান ও রুবেল সদর উপজেলার আর ধনঞ্জয় চাকমা দীঘিনালার বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জেলা সদরের নারাণখাইয়া ও স্বনির্ভর এলাকায় গোলাগুলি হয়। পরে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়। এর যেন পুনারাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য পাহাড়ি-বাঙালি দুপক্ষকেই অনুরোধ জানানো হয়েছে।
দীঘিনালা জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ওমর ফারুক বলেন, ‘গতকাল বিকেল থেকে পাহাড়ি বাঙালি যে সংঘাত এটা সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত চলে। এরপর আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হই। এরপরে গতকাল রাত থেকে শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘কারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এগুলো অ্যাসেস করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে আমরা তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। এখানে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে যাতে এটিকে কেন্দ্র করে অন্যান্য উপজেলায় যাতে উত্তেজনা না ছড়ায়, এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ সময় ব্যাপক অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। লারমা স্কয়ারে অন্তত ১২০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল বুধবার সকালে চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে মামুন নামের এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল বের করে দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে লারমা স্কয়ারে আগুন দেওয়া হয়।
এসবিডি/এবি
মন্তব্য করুন: