• ঢাকা

  •  রোববার, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫

বাংলাদেশ

ছোট প্লটের ফ্লোর এরিয়া রেশিও বেড়েছে ড্যাপে

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: ১০:৫৮, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ছোট প্লটের ফ্লোর এরিয়া রেশিও বেড়েছে ড্যাপে

প্রতীকী ছবি

ঢাকার ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) সংশোধন প্রস্তাবনায় ছোট আয়তনের প্লটভিত্তিক আবাসিক ভবনের ফ্লোর এরিয়া রেশিও বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নগর অঞ্চল পরিকল্পনাবিদরা। এতে রাজধানীতে জনঘনত্ব আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) আয়োজিত ‘বসবাসযোগ্যতায় তলানিতে থাকা ঢাকার ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) সংশোধনের প্রক্রিয়া, উদ্দেশ্য ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব’ শিরোনামে ভার্চুয়াল একটি আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, এইচবিআরসি-সেন্টার ফর হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চের প্রধান মো. আবু সাদেক, পরিকল্পনাবিদ ড. ফরহাদ-উর-রেজা এই আলোচনা সভায় যুক্ত হন। 

বক্তারা বলেন, ২০০৮ সালের ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় আবাসিক ভবনের জন্য মোটাদাগে রাস্তার প্রশস্থতা ও প্লটের আয়তনের ওপর ভিত্তি করে সর্বনিম্ন ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) মান সর্বনিম্ন ৩ দশমিক ১৫ ও সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৫ দেওয়া হয়েছিল। বর্তমান বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় আবাসিক এ-৩ (ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট) শ্রেণির জন্য এই মান সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ২৫ নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা ২০২৪ সালে খসড়া ইমারত বিধিমালায় অনুসরণ করা হয়েছিল। অথচ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রাজউক ইমারত বিধিমালার খসড়ায় প্লটভিত্তিক আবাসিক এ-৩ ক্যাটাগরির ফার মান ৫ দশমিক ৫ করা হয়েছে, যা প্রায় অবাসযোগ্য ঢাকা শহরের ওপর চাপ মারাত্মকভাবে বাড়িয়ে দেবে। অথচ বৈশ্বিকভাবেই ছোট আয়তনের প্লটভিত্তিক আবাসিক ভবনের ক্ষেত্রে ফার মান সাধারণত ১ থেকে ৩-এর মধ্যেই হয়ে থাকে। গোষ্ঠীস্বার্থে বিধিমালার ফার মান পরিবর্তন শহরের জন্য বাসযোগ্যতার জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। 

ঢাকার ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) সংশোধনের ক্ষেত্রে ঢাকার বাসযোগ্যতা এবং সামগ্রিক জনস্বার্থ, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ প্রাধান্য পাওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না বলে অভিযোগ এনেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। তারা বলেছেন, আবাসন ব্যবসায়ী, ভবন ডিজাইনসংশ্লিষ্ট পেশাজীবী ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট মহলের প্ররোচনায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও ড্যাপ সংশোধনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। এতে জনস্বার্থ ও ঢাকার বাসযোগ্যতাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হচ্ছে। নগর পরিকল্পনাবিদদের পরামর্শকে একদমই আমলে না নিয়ে স্বেচ্ছাচারীভাবে এই কার্যক্রম চলছে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে আইপিডি পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, অতীতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক স্বার্থগোষ্ঠী শহরের পরিকল্পনা ও ইমারত বিধিমালাকে অনৈতিকভাবে প্রভাবিত করার অপপ্রয়াস চালিয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতা ক্রমান্বয়ে তলানির দিকে গিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশেও ইমারত বিধিমালা এবং ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) সংশোধনের নামে ব্যবসায়িক গোষ্ঠী তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় তৎপর হয়ে উঠেছে, যা শহরের বাসযোগ্যতা, জনস্বাস্থ্য ও জনস্বার্থকে আরও হুমকিতে ফেলবে। এই তৎপরতায় সরকারি কিছু কর্মকর্তার পাশে কতিপয় পেশাজীবীরাও যোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি। সূত্র: খবরের কাগজ

এসবিডি/এবি

মন্তব্য করুন: