ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে ৫৮ দিন

ছবি: সময়বিডি.কম
দেশের নদী ও সাগরে আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন ইলিশ মাছ ধরা, পরিবহন ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তিনি।
উপদেষ্টা জানান, পাশের দেশের সঙ্গে সমন্বয় না থাকায় দেশটির মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশের মাছ আহরণে সুযোগ নেয়। যার কারণে এবার সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন রমজানে ঢাকা শহরে সুলভ মূল্যে মাছ, মাংস ও ডিম বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঢাকায় ২৫টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে জুলাই বিপ্লবের সময় যে সকল স্থানে সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ বেশি ছিল সে সকল স্থানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা জানান, পহেলা রমজান থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত ঢাকা শহরে ড্রেসড ব্রয়লার, ডিম, পাস্তুরিত দুধ ও গরুর মাংস এবং সারা দেশে ব্রয়লার, ডিম, পাস্তুরিত দুধ, গরুর মাংস ও খাসির মাংস সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
ড্রেসড ব্রয়লার মাংস (প্রতি কেজি) ২৫০ টাকা, দুধ পাস্তুরিত (প্রতি লিটার) ৮০ টাকা, ডিম (প্রতি ডজন) ১১৪ টাকা, গরুর মাংস (প্রতি কেজি) ৬৫০ টাকা।
তাছাড়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১১ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করবে সরকার।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘ইলিশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণে ২০১২ সাল থেকে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ আছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৫ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমান অন্তবর্তী সরকার দেশের মানুষের জন্যে ইলিশ সরবরাহ বাড়ানো এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যে সচেষ্ট।
পাশাপাশি, বাংলাদেশের মানুষ যারা বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন এবং দেশে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন, এমনকি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পাশে সোচ্চার ছিলেন, তাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সীমিত আকারে ইলিশ মাছ রপ্তানির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সারা বছর পাঠানো না গেলেও অধিক ইলিশ প্রাপ্তির সময় আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসিদের জন্য ইলিশ পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।’
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী সর্বাধিক প্রবাসী কর্মজীবী আছেন সৌদি আরবে প্রায় ৪৪ লাখ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় ২২ লাখ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিক অবস্থায় দুটি দেশে মোট ১১ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে। এ বছর আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যা কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর অন্যান্য দেশে পাঠানোর বিষয়ে বিবেচনা করা যেতে পারে। সূত্র: ইউএনবি
মন্তব্য করুন: