বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘর্ষে নিহত ৫
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) এবং আরাকান সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতারা সবাই আরসা'র সদস্য।
শুক্রবার (৭ জুলাই) ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ পশ্চিম) বি-১৫, বি-১৬ ও বি-১৭ ব্লক এলাকায় এ গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে তিনজন এবং উখিয়া আশ্রয়শিবিরের আইওএম হাসপাতালে নেওয়ার পর অপর দুজন মারা যান।
আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করেছেন।
নিহতরা হলেন - বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ) এইচ-৪৯ ব্লকের বাসিন্দা আনোয়ার ছাদেক (২২), একই আশ্রয়শিবিরের এ-২১ ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ হামিম (২১), বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১০) এইচ-৪২ ব্লকের বাসিন্দা মোঃ নজিবুল্লাহ (৩২), মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৩) বি-১৭ ব্লকের বাসিন্দা নুরুল আমিন (২২) ও অজ্ঞাতনামা ২৫ বছর বয়সী আরেকজন রোহিঙ্গা।
নিহত পাঁচজনই আরসার সদস্য দাবি করে ৮ এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন ও মিডিয়া) মোঃ ফারুক আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গোলাগুলিতে ঘটনাস্থলে নিহত তিনজনের একজন আনোয়ার ছাদেক ছিলেন বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ পশ্চিম) এইচ-৪৯ ব্লকের প্রধান জিম্মাদার। নিহত নজিবুল্লাহ ছিলেন বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১০) আরসার ক্যাম্প কমান্ডার। আর নিহত নুরুল আমিন ছিলেন মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৩) বি-১৭ ব্লকের আরসার সক্রিয় সদস্য। নিহত অপর দুজন আরসা সদস্য বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, ভোর পাঁচটার দিকে আরসার ২০-২২ জন সন্ত্রাসী বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ পশ্চিম) এইচ ব্লকের রোহিঙ্গা বসতিতে ঢুকে কয়েকজন রোহিঙ্গা মাঝিকে (নেতা) খুঁজতে থাকেন। এ সময় রোহিঙ্গাদের মধ্যে হইচই শুরু হয়। খবর পেয়ে আরএসও-এর ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আরসা সদস্যদের ঘিরে ফেললে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যা আশ্রয়শিবিরের বি-১৫, বি-১৬ ও বি-১৭ ব্লক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
রোহিঙ্গা সূত্রে জানা যায়, গুলিতে নিহত আনোয়ার ছাদেক বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ পশ্চিম) এইচ-৪৯ ব্লকের প্রধান জিম্মাদার ছিলেন। ইয়াবা বিক্রির টাকা, চাঁদাবাজির টাকা, অস্ত্র, গোলাবারুদসহ লুণ্ঠিত মালামাল রক্ষিত থাকে আনোয়ারের হাতে। তার নির্দেশে রোহিঙ্গা মাঝিদের অপহরণের পর টাকা আদায়, হত্যা ও হত্যার পরিকল্পনা হয়।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, নিহত পাঁচজনের মধ্যে চারজনের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। অপর ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জুলাই ৭, ২০২৩
এসবিডি/এবি/
মন্তব্য করুন: