মির্জাপুরে কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর
ছবি : সংগৃহীত
মির্জাপুরে প্রায় দুই শ বছরের পুরনো দিপাবলী কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা প্রতিমার মাথা ভেঙে চার স্থানে ফেলে রাখে। শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের দুরপাসা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মির্জাপুর সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বরত সেনা সদস্য, পুলিশসহ গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য ও জনপ্রতিনিধিরা মন্দিরটি পরিদর্শন করেছেন।
পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভাঙ্গা প্রতিমাগুলি বিসর্জন দেয় মন্দির কমিটি এবং এলাকার সনাতনীরা।
জানা গেছে, প্রায় দুই শ বছর আগে দুরপাসা গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সার্বজনীন দিপাবলী কালী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের আশপাশে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ছাড়াও মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস রয়েছে। আশপাশের বাড়ির মুসলমানদের সার্বিক সহযোগিতায় মন্দিরে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মন্দিরটিতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
শুক্রবার ভোর রাতে দুর্বৃত্তরা মন্দিরে হামলা চালিয়ে চারটি প্রতিমার মাথা ভেঙে নেয়। ভেঙে নেওয়া কালী প্রতিমার মাথা মন্দিরের পাশের হরেন বৈরাগীর বাড়িতে টিউবওয়েলের পাশে, মহাদেবের মাথা অধীর রঞ্জন আচার্য্যের বাড়ির শীতলা মন্দিরের সামনে, ডাকিনী প্রতিমার মাথা দিপাবলী কালী মন্দির ঘরের চালে এবং যোগিনী প্রতিমার মাথা মন্দিরের সামনে ফেলে রাখে।
শনিবার সকালে অধীর এবং হরেন বৈরাগীর বাড়ির লোকজন বাড়িতে ভাঙা মাথা দেখতে পেয়ে আতঙ্কিত হয় এবং মন্দিরে যান। সেখানে গিয়ে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে আশপাশের বাড়ির লোকজন এসে প্রশাসনকে অবহিত করেন।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মির্জাপুর সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বরত সেনা সদস্য, পুলিশসহ গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য, ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা মন্দির পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া সেনা সদস্যরা ওই গ্রামে টহলে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুরপাসা গ্রামের মোকাদ্দছ মাস্টার জানান, ভোর রাতে শব্দ পেয়েছিলেন। কিন্তু কুকুর ভেবে এগিয়ে যাননি। পাশাপাশি বসবাস হওয়ায় আমাদের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান ভেদাভেদ নেই।
মন্দিরের পাশের বাড়ির অধীর রঞ্জন আচার্য্যর সাথে কথা হলে তিনি জানান, তার মন্দিরেও হামলা হতো। তালা থাকায় আমার মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করতে না পারলেও মহাদেবের ভাঙা মাথা মন্দিরের সামনের রেখে গেছে।
মন্দির কমিটির সভাপতি চান মোহন সরকার জানান, প্রশাাসনের লোকজন মন্দির পরিদর্শন করেছেন। প্রশাসনের পরামর্শে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভাঙা প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোশারফ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। মুর্তি ভাঙার ঘটনায থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। এবিষয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাজ করছে বলে তিনি জানান।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আরিফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
এসবিডি/এবি
মন্তব্য করুন: