নিজের স্ত্রীকে অন্য পুরুষ দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ
বগুড়া: নিজের স্ত্রীকে অন্য পুরুষ দিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ধর্ষণের পর মাথার চুল ন্যাড়া করে শরীরে আগুন দিয়েছে স্বামী।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বগুড়া শহরের চকলোকমান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত ওই গৃহবধূ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনার পর স্বামী রফিকুল ইসলাম পালিয়ে গেছেন।
নির্যাতিতা গৃহবধূ ও তার স্বজনরা জানান, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার পরিবহন শ্রমিক রফিকুল ইসলাম দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী একটি বাসে সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করেন। তিনি গত দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে শহরের চকলোকমান এলকায় নুরুল ইসলামের বাসা ভাড়া নেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর অভিযোগ, তার স্বামী বিভিন্ন সময় বাসায় অপরিচিত পুরুষ নিয়ে এসে তাকে দেহব্যবসা করতে বলতো। এতে তিনি রাজি না হলে তাঁকে এসিড দিয়ে ঝলসে দেওয়ার হুমকি দেয় রফিকুল। বিষয়টি তাঁর বাবা-মা ও শ্বশুর-শ্বাশুড়িকেও জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁর স্বামী নিয়মিত তাঁকে দেহ ব্যবসার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।
শজিমেক হাসপাতালের গাইনী বিভাগের একটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ওই নারী বলেন, ‘আমার স্বামী পরনারীতে আসক্ত। তাকে নিষেধ করি, কিন্তু শোনে না। এ নিয়ে প্রায়ই আমাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। শনিবার বেলা ১২টার দিকে স্বামী রফিকুল তার এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় আসে। স্বামীর সহযোগিতায় ওই বন্ধু আমার হাত বেঁধে ও মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। এরপর স্বামী রফিকুল আমাকে মারপিট করে। ব্লেড দিয়ে হাত ও বুকে আঘাত করে। আমার শরীর অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে এবং চুল কেটে পালিয়ে যায়।স্বামীর দেওয়া আগুনে পেট থেকে নিম্নাংশ পুড়ে যায়। এ সময় তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।’
ওই গৃহবধূ আরও জানান, স্বামীর ভয়ে তিনি আজ সকাল থেকে বাসায় তালা দিয়ে বসেছিলেন। বেলা ১২টার দিকে তাঁর স্বামী দু’জন অপরিচিত পুরুষ নিয়ে বাসায় যায়। স্বামীর মনোভাব বুঝে তিনি দরজা খুলে দেননি। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে তাঁরা বাড়ির দেওয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে।
শজিমেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুনর রশিদ জানান, ওই নারীর চিকিৎসা তদারকি করা হচ্ছে। ওসিসি থেকে তাঁকে সকল ধরনের সহায়তাই দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে পুলিশকে পুরো বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আজিম উদ্দিন জানান, গৃহবধূর চুল কাটা, শরীরে নির্যাতনের জখম ও ফোসকার দাগ রয়েছে। এর আগে স্বামীর বন্ধু তাঁকে ধর্ষণ করেছে বলে তিনি দাবি করেছেন। বিকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কেউ মামলা করেননি। এর পরও স্বামী রফিকুল ইসলামকে আটকে অভিযান চলছে।
ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০
মন্তব্য করুন: