• ঢাকা

  •  শুক্রবার, নভেম্বর ১৫, ২০২৪

অপরাধ

আরিফার চতুর্ভুজ পরকীয়ায় ৩ প্রেমিকের হাতে খুন হয় এক প্রেমিক

সময়বিডি ডেস্ক

 প্রকাশিত: ১০:৪৮, ২০ জুন ২০২০

আরিফার চতুর্ভুজ পরকীয়ায় ৩ প্রেমিকের হাতে খুন হয় এক প্রেমিক

নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রামে চতুর্ভুজ পরকীয়া প্রেমের কথা ফাঁস করে দেওয়ায় প্রেমিকার নির্দেশে অন্য তিন রসিক প্রেমিকের হাতে খুন হয় এক প্রেমিক।

প্রেমিকা আরিফা বেগমের ((৩০) নির্দেশেই খুন হওয়া প্রেমিক হলেন বড়াইগ্রাম উপজেলার ইকোরি গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন (৩৮)। 

ঘটনার মাত্র দুইদিনের মাথায় এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যায় জড়িত অপর তিন প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৯ জুন) বেলা ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এসব তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান, গত ১৫ জুন বড়াইগ্রাম উপজেলার ইকোরি গ্রামের মৃত খয়ের উদ্দিনের ছেলে মোবারক হোসেন খুন হন। মোবারককে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ বিষয়ে নিহতের স্ত্রী রানী বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে মামলা করেন। এরপর পুলিশ তদন্তে নামে। ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে সোনাবাজুর গ্রামের কাচু খার স্ত্রী আরিফা বেগমকে গ্রেপ্তার করে।

তিনি আরও জানান, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আরিফা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন এবং অপর তিনজন প্রেমিকের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা জানান। পুলিশ ওই তিনজনেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- সোনাবাজু গ্রামের ইমরুল প্রামাণিকের ছেল রশিদ প্রামাণিক (৩৮), একই গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে জিহাদ আলী (৩২) এবং ইকোরি গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে আসাদুল ইসলাম (৩৫)।

পুলিশ সুপার জানান, এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন আরিফা। তিনি পালাক্রমে মোবারকসহ চারজনের সঙ্গেই অবৈধ মেলামেশা করতেন। তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতেন। মোবারক ঠিকমত আরিফাকে টাকা দিতেন না। এছাড়াও অন্যদের সঙ্গে আরিফার সম্পর্কের কথা ফাঁস করে দেন। এতে আরিফা ক্ষুব্ধ হয়ে অপর তিন প্রেমিককে নিয়ে তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করেন। 

গত সোমবার (১৫ জুন) বিকেলে ইকোরী গ্রামের বেড়ী বিলে গরু চরাতে গেলে  আরিফা খাতুন সেখানে গিয়ে তাঁকে দৈহিক মেলামেশার প্রস্তাব দেন। তিনিও রাজি হয়ে আরিফাকে নিয়ে পাটখেতে যান। এ সময় সেখানে আগে থেকে লুকিয়ে থাকা অন্য আসামিরা তাঁকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে চলে যান। এরপর কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই অভিযুক্তরা মোবারককে হত্যা করেন। পরে তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করেতে থাকেন।

পুলিশ সুপার বলেন, মোবারককে হত্যার পর আসামিরা মোবাইল ফোনে কোনো যোগাযোগ করেননি। কিন্তু ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় পুলিশ বিচক্ষণতার সঙ্গে আরিফাকে টার্গেট করে গ্রেপ্তারের পর হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসে।

মামলার তদারকি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) আবুল হাসনাত জানান, তদন্তের শুরুতে তারা সন্দেহভাজনদের মুঠোফোন পর্যবেক্ষণ করে কোনো তথ্যই উদ্ধার করতে পারেন না। পরে আরিফা খাতুনের মুঠোফোন পরীক্ষা করে দেখা যায় তার ফোনের সিম উল্টো করে লাগানো ছিল। তাতে পুলিশের সন্দেহ বাড়ে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা পুরো ঘটনা স্বীকার করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন আলী জানান, গৃহবধূ আরিফা খাতুনের চতুর্ভুজ প্রেমের দ্বন্দ্বে মোবারক হোসেনকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য একই সঙ্গে নিহত মোবারকসহ অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যেতেন। সম্প্রতি মোবারক হোসেন বিষয়টি গ্রামের মানুষকে জানিয়ে দেন। এ নিয়ে আসামিদের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন, বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ কুমার উপস্থিত ছিলেন।

জুন ২০, ২০২০

মন্তব্য করুন: