• ঢাকা

  •  শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪

ফিচার

কলাগাছের সুতা দিয়ে তৈরি এই ‘কলাবতী’ শাড়ি

নিউজ ডেস্ক:

 প্রকাশিত: ০৯:৩৪, ৩ এপ্রিল ২০২৩

কলাগাছের সুতা দিয়ে তৈরি এই ‘কলাবতী’ শাড়ি

বান্দরবানে কলাগাছের সুতা দিয়ে বানানো হলো শাড়ি। এই অসম্ভব কাজটি সম্ভব করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজীর অনুরোধে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাঝেরগাঁও গ্রামের রাধাবতী দেবী। প্রথম চেষ্টাতেই তিনি সফল হয়েছেন। 

বাংলাদেশের বান্দরবানে কলাগাছের সুতায় তৈরি এটি প্রথম শাড়ি। মাত্র আট দিনে তৈরি করে তাক লাগিয়ে দেওয়া শাড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে কলাবতী শাড়ি।

রবিবার (৩ মার্চ) বিকেল ৩টায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজী জানান, ফল দেওয়ার পর পরিত্যক্ত কলাগাছের আঁশ থেকে সুতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলাগাছের সুতায় ব্যাগ, ঝুঁড়ি, ফুলদানি, কলমদানি, ফাইল ফোল্ডার, শোবিজ ও বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করা হয়। এসব জিনিসপত্র তৈরিতে পাহাড়ের ৪০০ নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তৈরি করা জিনিষগুলো ব্র্যান্ডিং বান্দরবানের মাধ্যমে স্থানীয় হাটবাজার ও পর্যটকদের মধ্যে বিক্রি করা হয়। এ প্রকল্পের বড় সফলতা কলাগাছের সুতায় শাড়ি তৈরি। এটি বাংলাদেশের তৈরি প্রথম শাড়ি। শাড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে কলাবতী শাড়ি। 

তিনি বলেন, এটি একটি চ্যালেঞ্জ ছিল এবং সফল হয়েছি। পাহাড়ের নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ব্র্যান্ডিং বান্দরবানের জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের নেওয়া একটি পাইলট প্রকল্প এটি। বান্দরবান শহরের কালাঘাটা মণিপুরী পল্লিতে প্রথম এই শাড়িটি তৈরি করেছেন রাধাবতী দেবী।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক বলেন, কলাগাছের সুতা থেকে শাড়ি তৈরি হওয়ায় তাঁতশিল্পে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে। এখন এটিকে বাণিজ্যিক করতে গবেষণা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। 

তিনি আরো বলেন, প্রথম তৈরি হওয়া শাড়িটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে প্রদান করা হবে।

রাধাবতী দেবী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসক তাকে শাড়ি বানানোর জন্য নিয়ে যান। আগে কখনোই  বাংলাদেশে কলাগাছের সুতা থেকে শাড়ি তৈরি হয়েছে এমনটি শোনা যায়নি। তবে ভারতে কলাগাছের সুতা থেকে শাড়ি তৈরি হয়। প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম। এখন ভালো লাগছে। আমিই প্রথম কলাগাছের সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরি করেছি। 

তিনি বলেন, প্রথম দিকে আঁশ থেকে সুতা তৈরি করা, সুতাগুলো প্রক্রিয়াকরণ করতে সময় লেগেছে আট দিন। শাড়ির কাপড় বুনতে লেগেছে সাত দিন। তবে আগামীতে সব জিনিসপত্র ঠিকঠাক থাকলে এক দিনেই একসঙ্গে মেশিনে তিনটি শাড়ি তৈরি করা যাবে। 

সাধারণ একটি শাড়ি বুনতে ৫০০ গ্রাম সুতা লাগলেও কলাগাছের আঁশের সুতায় প্রথম শাড়িটি বুনতে এক কেজির মতো সুতা লেগেছে। একটি শাড়ি তৈরিতে খরচ পড়েছে সাড়ে তিন হাজার টাকার মতো। যখন আরো কম সময়ে এই শাড়ি বানানো যাবে তখন উৎপাদন খরচ আরো অনেক কমে আসবে, বলেন রাধাবতী দেবী।

বান্দরবান জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিয়া চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, একটি কলাগাছ দিয়ে ২০০ গ্রাম সুতা হয়। সেই হিসেবে পাঁচটি কলাগাছ থেকে এক কেজি সুতা হয়। কলাগাছের সুতা দিয়ে শাড়ি বানানোর ফলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবো। 

এপ্রিল ৩, ২০২৩

এসবিডি/এবি/

মন্তব্য করুন: