• ঢাকা

  •  রোববার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

অর্থ ও কৃষি

প্রাণিসম্পদে বিপ্লব ঘটিয়েছে কৃত্রিম প্রজনন ও ভ্রুণ স্থানান্তর প্রযুক্তি

মুহাম্মদ রায়হান উদ্দিন সরকার, বিশেষ প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: ০৭:৪১, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রাণিসম্পদে বিপ্লব ঘটিয়েছে কৃত্রিম প্রজনন ও ভ্রুণ স্থানান্তর প্রযুক্তি

ছবি: সংগৃহীত

সবার জন্য নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিত করা সরকারের লক্ষ্য। এ জন্যই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও ভ্রুণ স্থানান্তর প্রযুক্তি বাস্তবায়ন প্রকল্পের আওতায় সম্পূর্ণ নতুনভাবে ২টি পূর্ণাঙ্গ কৃত্রিম প্রজনন ল্যাব কাম বুল স্টেশন এবং ৫টি বুল কাফ রিয়ারিং ইউনিট কাম মিনি ল্যাব এবং গবাদিপশুর সুষম খাদ্য নিশ্চিতে একটি টোটাল মিক্সড রেশন (টিএমআর) খাদ্য কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। 

বুল কাফ রিয়ারিং ইউনিট কাম ল্যাবগুলোতে সরকারি দুগ্ধ খামারগুলোতে জন্ম নেয়া সম্ভাবনাময় ষাঁড় বাছুর লালন-পালন করে প্রজনন ষাঁড় তৈরি করা হচ্ছে। প্রজনন ষাঁড় থেকে সিমেন সংগ্রহ করে গবাদিপশুর জাত উন্নয়নের জন্য সারাদেশে কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানান প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন। 

গবাদিপশুর জাত উন্নয়নের জন্য প্রায় ২৯ লাখ ৭৪ হাজারটি গাভীকে কৃত্রিম প্রজনন করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ও স্থানীয় উদ্যোক্তারা সবাই মিলে সহযোগিতা করায় প্রাণিসম্পদে বাংলাদেশ আজ একটি সাফল্যের জায়গায় পৌঁছেছে। দেশের প্রাণিজ আমিষের ঘাটতি পূরণের জন্য আবহাওয়া উপযোগী সংকর জাতের বিফ ক্যাটল উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প চলমান আছে, যা দেশের মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি ও জনপ্রতি মাংসের প্রাপ্যতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

উল্লেখ্য, গবাদি পশুর জাত উন্নয়নে সরকার সারাদেশে কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করছে। এর ফলেই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের  বাস্তবায়নাধীন “কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও ভ্রুণ স্থানান্তর প্রযুক্তি বাস্তবায়ন” প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে আধুনিক মানের “বুল কাফ রিয়ারিং ইউনিট কাম মিনিল্যাব” স্থাপন করা হয়েছে। বগুড়ার  শেরপুরে দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামারের ৫ একর জায়গার উপরে এটি স্থাপন করা হয়। 

এক সময় ভারত-মিয়ানমার থেকে কোরবানির পশু আনার জন্য বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হতো। আজ আমাদের উৎপাদিত পশু কোরবানির চাহিদা মেটানোর পরও উদ্বৃত্ত হচ্ছে। গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ ও বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক পোল্ট্রি উৎপাদন করে একদিকে যেমন বেকারত্ব কমেছে তেমনি বেড়েছে উৎপাদনও। আর তারই ধারাবাহিকতায় দেশ মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে গেছে। আর এখন দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বড় পরিসরে বিশ্ববাজার ধরতে চায় বাংলাদেশ। 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও ভ্রুণ স্থানান্তর প্রযুক্তি বাস্তবায়ন প্রকল্পের প্রধান ও  সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন এর নিকট থেকে জানা যায়, দেশে বিগত ১০ বছরে মাংসের উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। দেশে ব্যাপক হারে পশু পালন করায় কোরবানির ঈদে ভারতীয় গরু আমদানির প্রয়োজনীয়তাও ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। প্রাণি নিয়ে কাজ করাই এই অধিদফতরের কাজ। সরকারের ভিশন তথা জনগণের আমিষ চাহিদা পূরণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।  

বড় পরিসরে এই কার্যক্রম এগিয়ে গেলে মাংস ও মাংসজাত পণ্যেও আলাদা পরিচিতি পাবে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে রফতানি আয়ের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন মানুষের মধ্যেও প্রাণিসম্পদে আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩

রায়হান/এবি/

মন্তব্য করুন: