• ঢাকা

  •  শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪

ভিনদেশ

হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত, বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত, বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া

ইয়াহিয়া সিনওয়ার

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) এই দাবি করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

রয়টার্স জানায়, গাজায় একটি অভিযানে সিনওয়ার নিহত হয়েছে বলে জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর ডিএনএ পরীক্ষা করে এই তথ্য নিশ্চিত করে তারা। 

তবে এ বিষয়ে হামাসের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, তিন ‘সন্ত্রাসীকে’ লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালিয়েছে তারা। তবে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করা যাচ্ছিল না। তাদের মধ্যে ইয়াহিয়া সিনওয়ার আছেন কিনা তা খতিয়ে দেখার কথা জানায় তারা। সিনওয়ার দীর্ঘদিন ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী থাকায় তার ডিএনএ নমুনা ছিল তাদের হাতে। 

এদিকে ইয়াহিয়া সিনওয়ার হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। এটিকে ইসরায়েলের জন্য বড় সাফল্য বলে মনে করছে তারা। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা জোরদার করবে বলেও প্রত্যাশা করছে্

হামাসপ্রধানকে হত্যার খবরে বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের জন্য আজ একটি শুভ দিন। ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ায় গাজার বুকে হামাসের ক্ষমতার অবসান ঘটবে। একটি রাজনৈতিক মীমাংসার সুযোগ তৈরি হবে। এতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিরা একটি ভালো ভবিষ্যৎ উপহার পাবে।

হোয়াইট হাউস বলেছে, সিনওয়ারকে খুনের মিশনে সফল হওয়ায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাইডেন। বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে জিম্মিদের দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, সে ব্যাপারে কথা বলেছেন তারা। এ ছাড়া ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যুদ্ধের সমাপ্তি টানার বিষয়েও তাদের মধ্য কথা হয়েছে। 

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের মিলওয়াকিতে এক নির্বাচনি সমাবেশে কমলা হ্যারিস বলেছেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি শুধু এটুকু আশা করতে পারি যে হামাসের কারণে যেসব পরিবার ভুগছে, তারা এখন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ইহুদিদের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দিনটির জন্য দায়ী ইয়াহিয়া সিনওয়ার। যুক্তরাজ্য তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করবে না। 

তিনি বলেন, জিম্মিদের মুক্তি, যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি লম্বা সময় ধরে বিলম্বিত হচ্ছে। এখন আমরা মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি এবং টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যেতে পারি। 

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, 'হামাসের নৃশংস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে আইডিএফ দ্বারা নির্মূল করা হয়েছে। সিনওয়ারের নেতৃত্বে, হামাস ৭ অক্টোবরের ভয়াবহ নৃশংসতা চালিয়েছিল। সে ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল এবং সারাদেশে বেসামরিক নাগরিকদের উপর নির্বোধ, ধ্বংসাত্মক হামলা শুরু করেছিল। অঞ্চলটি আজ তার শিকার ও তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার দিয়েছে। পাশাপাশি একটি রাজত্বের অবসান ঘটিয়েছে।'

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবক বলেছেন, 'সিনওয়ার ইসরায়েল ও এর জনগণকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। ৭ অক্টোবরের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তিনি হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু এবং পুরো অঞ্চলের জন্য দুর্ভোগ নিয়ে এসেছিলেন। হামাসকে এখনই সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে এবং অস্ত্র ফেলে গাজার মানুষের দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে হবে।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, 'ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ৭ অক্টোবরের গণহত্যার প্রধান অপরাধীর মৃত্যু হলো। আমার বিশ্বাস, একটি নতুন পর্যায় এখন শুরু হওয়া উচিত। এখন সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা এবং গাজায় পুনর্গঠন শুরু করার সময় এসেছে। আমরা এই প্রচেষ্টাগুলোকে জোরালোভাবে সমর্থন করবো এবং একটি গুরুতর ও বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করতে কাজ করবো, যা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সহজ করবে।'

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট  ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই ঘটনাকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জন্য বড় সাফল্য বলে মন্তব্য করে বলেন, জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা এবং যুদ্ধ শেষ করার জন্য এ সুযোগকে কাজে লাগানো উচিত। এখন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ করা জরুরি বলেও মনে করছেন তিনি। সূত্র : রয়টার্স

এসবিডি/এবি

মন্তব্য করুন: