আদানির ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চায় বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত
আদানি পাওয়ারকে তাদের ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যান্ট থেকে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে। এ ছাড়া বকেয়া-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নেমে এসেছিল। এখন পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ চায় বাংলাদেশ।
আদানি ২০১৭ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে করা ওই চুক্তি অনুসারে, আদানি পাওয়ার ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যে নিজেদের কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দুই ইউনিটের মোট উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। আর ওই বিদ্যুৎ শুধু বাংলাদেশের কাছেই বিক্রি করা হয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে বকেয়া দিতে দেরি হওয়ায় গত ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশে সরবরাহ অর্ধেক করে দেয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। এর ফলে ১ নভেম্বর কেন্দ্রটির একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। এতদিন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ৪২ শতাংশ সক্ষমতায় কাজ করছিল। সে সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আদানিকে অর্ধেক সরবরাহ অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছিল।
এদিকে, নতুন চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটটা চালুর প্রথম প্রচেষ্টা কারিগরি ত্রুটির জন্য ব্যর্থ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী, তারা গত সোমবার দ্বিতীয় ইউনিটটি আবার চালুর করার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু উচ্চমাত্রার কম্পনের কারণে তা সম্ভব হয়নি।’
বকেয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমানে আমরা প্রতি মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলার করে বিল পরিশোধ করছি। আমরা আরও বেশি পরিশোধ করার চেষ্টা করছি, এবং আমাদের উদ্দেশ্য হলো বকেয়ার পরিমাণ কমিয়ে আনা। এখন আদানির সঙ্গে বড় কোনো সমস্যা নেই।’
গত ডিসেম্বরে আদানির এক সূত্র জানিয়েছিল যে, বিপিডিবির কাছে তাদের পাওনা ৯০০ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে রেজাউল করিম জানিয়েছিলেন বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলার।
মূলত বিদ্যুৎ শুল্ক কীভাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটিকে কেন্দ্র করেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল। ২০১৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী, দুটি সূচকের গড়ের ওপর ভিত্তি করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে বিদ্যুৎ নিতে বাংলাদেশের যে খরচ হয়, আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে তার চেয়েও প্রায় ৫৫ শতাংশ বেশি খরচ হচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের এক আদালত বিশেষজ্ঞদের আদানির ওই চুক্তি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। চলতি মাসেই নিজেদের মত জানাতে পারেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে চুক্তি নিয়ে ফের আলোচনাও হতে পারে। সূত্র: রয়টার্স
এসবিডি/এবি
মন্তব্য করুন: